নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি শিল্পপতি। এখন তিনি শিল্পপতি কাম রাজনীতিবিদ। সভা সমাবেশ মানববন্ধন র্যালী এসবে তার মানায় না। তিনি এসব জানেন না পারেন না। তিনি সব সময় থাকেন এসি রুমে চার দেয়ালের ভিতরে। প্রয়োজনে টাকা খরচ করে এসব কর্মসূচি মাটি দিবেন তুবও এসব তিনি করবেন না। এসব না করেই তো তিনি দেশের গুরুত্বপূর্ন একটি বিশাল রাজনৈতিক দলের বিশাল বিশাল পদ পেয়েছেন। তবে এতকিছুর পরে দলের চেয়ারপারসন যখন নারায়ণগঞ্জ দিয়ে গেলেন তখন তিনি এসি রুম থেকে বের হয়ে চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে রোদে দাঁড়ালেন।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম এক সময় কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিএনপিতে এসে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদে রয়েছেন তিনি।
২৯ অক্টোবর শনিবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গী ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ হয়ে যান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীরা সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্পটে জড়ো হয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায় নেতাকর্মীরা। ওই সময় গিয়েছিলেন শিল্পপতি শাহআলমও। সঙ্গে ছিলেন আওয়ামীলীগের দালাল হিসেবে খ্যাতি পাওয়া অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।
এ আজাদ বিশ্বাস হলেন শাহআলমের বিয়াই। শাহআলম যখন নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে মুঠোবন্ধি করেছেন তখন আজাদ বিশ্বাসকে বিএনপিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। আর ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে শাহআলম অবাদ রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি করেছেন আজাদ বিশ্বাসের মাধ্যমে। আজাদ বিশ্বাস এখন আওয়ামীলীগের এমপি মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গুণকীর্তন করছেন প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ জানানোর সমাবেশে গিয়ে। যা শাহআলমের দিকনির্দেশনায়।
শনিবার বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে গিয়ে ১০মিনিট মহাসড়কে অবস্থান করেছিলেন শাহআলম। তার সঙ্গে দালাল আজাদ বিশ্বাস। তবে শনিবার সকাল থেকেই টানা ৩ ঘন্টা রোদে দাড়িয়ে ছিলেন নেতাকর্মীরা। প্রখর রোদে ব্যানার ফ্যাস্টুন নিয়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও শিল্পপতি বিএনপি নেতা রাজপথে দাড়াতে পারলেন না দশ মিনিটের বেশি সময়।
২৮ অক্টোবর শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে খালেদা জিয়ার গমনের সময়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকাতে ছিলেন আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস। যদিও সময়ে তাঁকে তার গুরু জেলা বিএনপির সহ সভাপতি শাহ আলমের ছবি সম্বলিত ব্যানার পোস্টার আর প্লেকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
আজাদ বিশ্বাসের আশেপাশে তখন শাহআলমের নেতাকর্মীরাই ছিলেন। তখন কয়েকজন জানান, শাহআলমের নির্দেশেই আজ আজাদ বিশ্বাস এসেছিলেন। আর আমাদেরও নির্দেশনা দেন যেন আজাদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে শাহআলমের পক্ষে শো ডাউনে অংশ নেই।
জানা গেছে, গত ১৯ অক্টোবর ফতুল্লা দেলপাড়া এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত হন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফতুল্লা থানা বিএনপির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস। ওই সমাবেশে আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমান সহ সরকারি দলের বেশকজন এমপি ও মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে আজাদ বিশ্বাস বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামীলীগ সরকার, শেখ হাসিনা ও সরকারি দলের এমপি মন্ত্রীদের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন। যদিও সরকারি দলের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নিজেও বিএনপিকে নেতাদের প্রশংসা করেছেন।
সমাবেশে আজাদ বিশ্বাস বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেছেন, ‘আমার নেতা শামীম ওসমান। আমি বিএনপি নেতা হয়ে শামীম ওসমানকে স্যালুট জানাই।’ যেখানে বিএনপি এ সরকারকে বারবার অবৈধ দাবি করছেন। সরকারের নানা সমালোচনা করছেন আর বিএনপি নেতা আজাদ বিশ্বাস করছেন সরকারের গুণকীর্তন। ওই বক্তব্যে সামাজিক যোগােেযাগ মাধ্যম সহ মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ঘোষণা দিয়েছেন আজাদ বিশ্বাসের সঙ্গে কোন সভা সমাবেশে তিনি থাকবেন না। এছাড়াও নেতাকর্মীরা আজাদ বিশ্বাসের বহিষ্কার দাবি করেন।